
Tata Technologies, ভারতের Tata Group-এর অধীনে একটি প্রধান প্রযুক্তি এবং পণ্য প্রকৌশল সেবা প্রদানকারী কোম্পানি, সম্প্রতি জানিয়েছে যে তাদের ওপর একটি র্যানসমওয়্যার হামলা হয়েছে। এই হামলার ফলে তাদের কিছু আইটি সিস্টেম বা প্রযুক্তিগত সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার কারণে কোম্পানিটিকে কিছু সেবা স্থগিত করতে হয়েছে। তবে তারা জানায়, তাদের ক্লায়েন্ট ডেলিভারি সেবা পুরোপুরি কাজ করছে এবং এ হামলা এতে কোনো প্রভাব ফেলেনি। র্যানসমওয়্যার হামলা হলো এমন একটি সাইবার আক্রমণ যেখানে হামলাকারীরা এক ধরনের ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে যার মাধ্যমে আক্রান্ত প্রতিষ্ঠান তাদের তথ্য বা সিস্টেমকে লক বা এনক্রিপ্ট করে, এবং পরে মুক্তিপণ দাবি করে। এই ধরনের হামলায়, যদি প্রতিষ্ঠান মুক্তিপণ দেয়, তবে তাদের তথ্য বা সিস্টেম পুনরুদ্ধার করা হয়। কিন্তু Tata Technologies এই হামলার জন্য মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট করে জানায়নি।এ ঘটনায় কোম্পানিটি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে তদন্ত শুরু করেছে। তারা জানায়, এই তদন্তের মাধ্যমে তারা হামলার মূল কারণ খুঁজে বের করবে এবং যেকোনো ধরনের ক্ষতি বা প্রভাব মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তবে, তারা এখনও হামলার বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেনি, যেমন র্যানসমওয়্যার আক্রমণকারী দলটির পরিচয় বা এটি কোম্পানির কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করেছে কিনা।Tata Technologies ১৯৮৯ সালে Tata Motors-এর অটোমোটিভ ডিভিশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৯৪ সালে এটি একটি স্বতন্ত্র কোম্পানি হিসেবে কাজ শুরু করে। Tata Technologies বর্তমানে পৃথিবীজুড়ে ২৭টি দেশে অটোমোটিভ, এরোস্পেস, এবং ভারী প্রকৌশল কোম্পানিগুলোর জন্য পণ্য প্রকৌশল এবং গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) সেবা প্রদান করে।কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি বিভিন্ন বড় প্রকৌশল কোম্পানির অধিগ্রহণ করেছে, যেমন INCAT International, Cambric Corporation, এবং Escenda Engineering, যার মাধ্যমে এটি নিজের ব্যবসায়িক পরিধি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। এই প্রসঙ্গে, Tata Technologies সম্প্রতি নভেম্বর ২০২৩-এ ভারতীয় শেয়ারবাজারে আইপিও (IPO) ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্য নিয়ে ছিল।Tata Technologies বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে তাদের কাজ পরিচালনা করছে। কোম্পানিটির ২০টি ডেলিভারি সেন্টার এবং ১২,৫০০’রও বেশি কর্মী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন প্রযুক্তি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম এবং তাদের বিভিন্ন শিল্পে প্রচুর ক্লায়েন্ট রয়েছে।এই হামলা থেকে বোঝা যায়, সাইবার আক্রমণ আজকাল শুধুমাত্র ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নয়, বরং বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। সাইবার নিরাপত্তা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং প্রতিষ্ঠাগুলোকে সাইবার আক্রমণ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আরও শক্তিশালী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সাইবার সুরক্ষা কর্মসূচী ও প্রযুক্তি সেবা শুধুমাত্র আক্রমণের পরে হস্তক্ষেপের জন্য নয়, বরং এটি প্রতিরোধের অংশ হিসেবে কাজ করতে হবে, যাতে প্রতিষ্ঠানগুলি আক্রমণের আগেই তাদের সিস্টেমের দুর্বলতা চিহ্নিত করতে পারে।এই ঘটনায় Tata Technologies এর সাইবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা ও এর প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইবার আক্রমণ কোনো প্রতিষ্ঠানকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, তার প্রমাণ এটি। কোম্পানির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের আক্রমণ প্রতিরোধ করা।