
Apple তার নতুন বাজেট স্মার্টফোন iPhone 16e বাজারে এনেছে, তবে তেমন কোনো বড় ইভেন্টের আয়োজন করা হয়নি। কোনো সাংবাদিক এই ফোনের ছবি তুলতে ভিড় জমায়নি, এমনকি অনলাইনে কোনো বড় ঘোষণাও করা হয়নি। বরং Apple-এর CEO টিম কুক মাত্র কয়েকদিন আগে একটি টুইট করে জানিয়েছিলেন যে নতুন হার্ডওয়্যার আসছে, তারপরই একটি প্রেস রিলিজের মাধ্যমে ফোনটির ঘোষণা দেওয়া হয়।iPhone 16e খুব বেশি আকর্ষণীয় কোনো ফোন নয়, বরং এটি বেশ পরিচিত ডিজাইনের একটি ডিভাইস। Apple পুরনো মডেলগুলোর বৈশিষ্ট্য নিয়ে একটি নির্ভরযোগ্য ফোন তৈরি করেছে, যা খরচ কম রাখার পাশাপাশি ভালো পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে পারে। ফোনটির ডিজাইন iPhone 13 ও 14-এর মতো এবং এর উপরের অংশে আগের মতোই ডিসপ্লে নচ রাখা হয়েছে। যদিও iPhone 15-এর অ্যাকশন বোতাম এতে আছে, তবে নতুন ক্যামেরা কন্ট্রোল ফিচারটি নেই।এই ফোনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হলো Apple-এর নিজস্ব তৈরি C1 মডেম। সাধারণত মডেম সম্পর্কে মানুষ তেমন ভাবে না, কারণ এটি মূলত ইন্টারনেট সংযোগের জন্য কাজ করে। তবে এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ Apple এই প্রথম নিজস্ব মডেম তৈরি করেছে, যা ভবিষ্যতে তাদের ডিভাইসে আরও উন্নতি আনতে সাহায্য করবে।যদিও iPhone 16e অনেক কিছুই পুরনো মডেলগুলোর থেকে ধার করেছে, তবে কিছু উন্নত ফিচারও রয়েছে যা নতুন নামে আসার কারণ ব্যাখ্যা করে। এটি এখন iPhone SE সিরিজের অংশ নয়, কারণ এতে Apple-এর নতুন A18 চিপ দেওয়া হয়েছে, যা একই চিপ iPhone 16-এও ব্যবহার করা হয়েছে।এই চিপ থাকা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি iPhone 16-এর তুলনায় 200 ডলার কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া, এটি ভবিষ্যতের জন্য বেশি উপযোগী কারণ Apple দীর্ঘদিন ধরে এই চিপের জন্য সফটওয়্যার আপডেট দেবে, যেখানে iPhone 15-এর A16 চিপ তুলনামূলক কম সময় আপডেট পাবে।

ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকা মানে শুধু বাগ ফিক্স ও নিরাপত্তা আপডেট পাওয়া নয়, বরং এতে Apple-এর নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি Apple Intelligence চালানো যাবে। এখন পর্যন্ত কেবল iPhone 16 সিরিজ ও iPhone 15 Pro মডেলে এটি চালানো সম্ভব ছিল, কিন্তু iPhone 16e তাতে যুক্ত হয়েছে। তবে এখনো এই প্রযুক্তি কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে ব্যবহারকারীদের চাহিদার ওপর।Apple মূলত এই ফোনটি চীন ও ভারতের মতো বাজারের কথা ভেবে এনেছে, যেখানে কম দামে ভালো ফোনের চাহিদা বেশি। যদিও 200 ডলার দাম কমানো খুব বড় কিছু নয়, তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাজারে এটি Apple-এর জন্য একটি বড় সুবিধা হতে পারে। তবে দাম কমিয়ে দিলেই যে প্রচুর মানুষ নতুন iPhone কিনবে, তা নয়। চীনে স্থানীয় স্মার্টফোন নির্মাতাদের সঙ্গে Apple কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছে এবং বাণিজ্যিক টানাপোড়েনের কারণে এটি আরও জটিল হতে পারে।ভারতের মতো বাজারে Apple-এর আরও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, কারণ এখানে iPhone 14 ও 15 এখনো সহজলভ্য। যুক্তরাষ্ট্রে iPhone 14 বাজার থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে, তবে ভারতে এখনো এটি কেনা সম্ভব। iPhone 15 এখনো অফিসিয়ালভাবে বিক্রি হচ্ছে, যার দাম 699 ডলার। ফলে iPhone 16e-এর অবস্থান কিছুটা অস্পষ্ট হয়ে পড়েছে।এই ফোনের দাম iPhone 15-এর তুলনায় মাত্র 100 ডলার কম, যেখানে অনেক Android নির্মাতা তাদের মিড-রেঞ্জ ফোন ও ফ্ল্যাগশিপ ফোনের মধ্যে বড় পার্থক্য রাখে। বাজেট ফোনের বাজারে অ্যান্ড্রয়েডের তুলনায় iPhone 16e এখনো তেমন সস্তা নয়, কারণ Apple সাধারণত একেবারে কমদামের ফোন তৈরি করে না।iPhone 16e দেখতে iPhone 14-এর মতো হলেও, এটি পুরনো ডিজাইনের মতো মনে হয় না। আগের iPhone SE মডেলটি ২০২২ সালে লঞ্চ হওয়ার সময় পুরনো মনে হয়েছে, কিন্তু iPhone 16e এখনো আধুনিক মনে হয় কারণ গত কয়েক বছরে iPhone-এর ডিজাইন খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। তবে এতে Face ID রাখা হয়েছে, ফলে অনেকেই Touch ID হারানোর কারণে হতাশ হতে পারেন।