
গত শুক্রবার প্রকাশিত একটি আদালত নথি থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ২০১৯ সালে এনএসও গ্রুপের পেগাসাস Spyware ব্যবহার করে ৫১টি দেশের ১,২২৩ জন হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীকে টার্গেট করা হয়েছিল। মেটা মালিকানাধীন WhatsApp সেই সময় এনএসও গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলএই নথিতে আক্রান্ত ব্যবহারকারীদের দেশভিত্তিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। মেক্সিকোতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫৬ জন, ভারত ১০০ জন, বাহরাইন ৮২ জন, মরক্কো ৬৯ জন, পাকিস্তান ৫৮ জন, ইন্দোনেশিয়া ৫৪ জন এবং ইসরায়েলে ৫১ জন। এছাড়াও স্পেন, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো পশ্চিমা দেশেও আক্রান্ত ব্যবহারকারী রয়েছেনমজার ব্যাপার হলো এই বিশাল সংখ্যক ব্যবহারকারীকে টার্গেট করা হয়েছিল মাত্র দুই মাসের মধ্যে। ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে এই হামলা চালানো হয়েছিলএখানে একটি বিষয় পরিষ্কার করা দরকার। কোনো দেশে আক্রান্ত ব্যক্তি থাকলেই সেই দেশের সরকার দায়ী নয়। একটি সরকার অন্য দেশের নাগরিককেও টার্গেট করতে পারে। যেমন সিরিয়ার নাম তালিকায় থাকলেও এনএসও সেখানে তাদের প্রযুক্তি বিক্রি করতে পারে নাখরচের দিক থেকে দেখতে গেলে মেক্সিকো সরকার এনএসও’র স্পাইওয়্যারে ৬০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছিল বলে জানা গেছে। হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিং টুলের এক বছরের লাইসেন্সের দাম ছিল ৬.৮ মিলিয়ন ডলার। ২০১৯ সালে এনএসও’র আয় ছিল অন্তত ৩১ মিলিয়ন ডলারএনএসও গ্রুপ ইতিমধ্যে ১০টি সরকারি কাস্টমারকে তাদের সার্ভিস থেকে বাদ দিয়েছে অপব্যবহারের অভিযোগে। ২০২৩ সালে একটি মার্কিন আদালত রায় দিয়েছিল যে এনএসও ইউএস হ্যাকিং আইন ভঙ্গ করেছেসাইবার নিরাপত্তা গবেষক রুনা স্যান্ডভিক বলেছেন, মেক্সিকোতে শুধু ৪৫৬ জন আক্রান্তের সংখ্যাই দেখায় এই স্পাইওয়্যার সমস্যার প্রকৃত মাত্রা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আক্রান্তরা জানতেও পারেন না তাদের ডিভাইস হ্যাক হয়েছেহোয়াটসঅ্যাপের মামলার পরবর্তী শুনানিতে এখন নির্ধারিত হবে এনএসও গ্রুপকে কতটা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই তালিকা প্রমাণ করে যে পেগাসাস স্পাইওয়্যার শুধু স্বৈরাচারী সরকারই নয়, গণতান্ত্রিক দেশেও ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হচ্ছেহোয়াটসঅ্যাপ ও এনএসও গ্রুপের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।