
৬ মে, হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) একটি বড় আইনি জয় পায় যখন একটি আদালত ber এনএসও গ্রুপকে ১৬৭ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বলে। এনএসও গ্রুপ একটি ber বিতর্কিত ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান, যারা পেগাসাস (Pegasus) নামে একটি স্পাইওয়্যার তৈরি করেছে। এই মামলা শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের অক্টোবরে, যখন হোয়াটসঅ্যাপ অভিযোগ করে যে এনএসও গ্রুপ একটি ত্রুটির সুযোগ নিয়ে তাদের অ্যাপের মাধ্যমে প্রায় ১,৪০০ ব্যবহারকারীর ফোন হ্যাক করেছে। মামলার রায় পেতে পাঁচ বছরের বেশি সময় লেগেছে। বিচার চলেছে এক সপ্তাহ, যেখানে এনএসও-এর সিইও ইয়্যারন শোহাত এবং হোয়াটসঅ্যাপের কর্মীরা সাক্ষ্য দেন। এই সময়ে আমরা অনেক চমকপ্রদ তথ্য জানতে পেরেছি।
১. হোয়াটসঅ্যাপে আক্রমণ কীভাবে হয়েছিল
NSO Group এমন একটি প্রযুক্তি তৈরি করেছিল, যা ব্যবহারকারীর ফোনে কোনো রকম ক্লিক বা অ্যাকশন ছাড়াই স্পাইওয়্যার ইনস্টল করতে পারত। হোয়াটসঅ্যাপের আইনজীবী জানান, তারা ভুয়া ফোনকলের মাধ্যমে আক্রমণ চালাত। ফোনে কল গেলেই একটি বিশেষ সার্ভারের সঙ্গে সংযোগ তৈরি হতো এবং সেই পথেই ফোনে পেগাসাস স্পাইওয়্যার ঢুকে যেত। শুধু ফোন নম্বর জানলেই এই আক্রমণ চালানো সম্ভব ছিল।
২. মামলা চলাকালীনও আক্রমণ বন্ধ হয়নি
২০১৯ সালের নভেম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ মামলা দায়ের করে। অথচ এনএসও তখনও আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিল। তারা “Hummingbird” নামে কোড করা একাধিক পদ্ধতি ব্যবহার করত — যার মধ্যে “Erised”, “Eden” ও “Heaven” ছিল।
৩. আমেরিকান নম্বরেও আক্রমণের প্রমাণ
NSO অনেকদিন দাবি করে আসছিল, তারা আমেরিকান (+1) নম্বরে আক্রমণ চালাতে পারে না। কিন্তু মামলার সময় তাদের আইনজীবী স্বীকার করেন, তারা একবার একটি বিশেষভাবে তৈরি পেগাসাস ভার্সন ব্যবহার করে FBI-এর জন্য আমেরিকান নম্বরে পরীক্ষা চালিয়েছিল।
৪. সরকার কীভাবে পেগাসাস ব্যবহার করে
এনএসও জানিয়েছে, সরকারিভাবে পেগাসাস ব্যবহারকারীরা নিজেরা কোন আক্রমণ পদ্ধতি বেছে নেয় না। বরং পেগাসাস নিজেই ঠিক করে কোন এক্সপ্লয়ট ব্যবহার করে আক্রমণ চালানো হবে। তাদের মূল লক্ষ্য থাকে তথ্য আদায় করা, পদ্ধতি নয়।
৫. এনএসও–তে কয়েকশো কর্মী কাজ করে
এনএসও এবং তাদের মূল কোম্পানি Q Cyber মিলে প্রায় ৩৫০ থেকে ৩৮০ জন কর্মী আছে। এর মধ্যে Q Cyber-এ প্রায় ৫০ জন কাজ করেন।
৬. অ্যাপলের পাশেই এনএসও–র অফিস
এনএসও-এর অফিস ইসরায়েলের হার্জলিয়াতে অবস্থিত, আর মজার ব্যাপার হলো — এই একই ভবনের নিচের তলাগুলোতে অ্যাপলের অফিস! পেগাসাস যেহেতু iPhone ব্যবহারকারীদেরও টার্গেট করে, তাই এই মিলটা আরও অদ্ভুত।
৭. ইউরোপে পেগাসাস বিক্রির মূল্য মিলিয়ন ডলারে
এক কর্মীর সাক্ষ্যে জানা যায়, ইউরোপীয় ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে ২০১৮-২০২০ সালের মধ্যে পেগাসাসের জন্য ৭ মিলিয়ন ডলার চার্জ করা হতো, আর “গোপন পদ্ধতির” জন্য আরও ১ মিলিয়ন ডলার লাগত। কিছু দেশ যেমন সৌদি আরব বা মেক্সিকো অনেক বেশি অর্থ প্রদান করেছে — ৫৫ থেকে ৬১ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।
৮. এনএসও–এর আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ
মামলার সময় এনএসও জানিয়েছে, তারা ২০২৩ সালে ৯ মিলিয়ন ডলার ও ২০২৪ সালে ১২ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি করেছে। বর্তমানে তাদের ব্যাংকে মাত্র কয়েক মিলিয়ন ডলার আছে, এবং মাসে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়, যা মূলত কর্মীদের বেতন। তারা আরডি (R&D) বিভাগে বিশাল খরচ করছে — ২০২৩ সালে ৫২ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪ সালে ৫৯ মিলিয়ন ডলার।
শোহাত আদালতে বলেন, “সত্যি কথা বলতে গেলে, আমাদের পক্ষে কিছুই পরিশোধ করা সম্ভব নয়। আমরা টিকে থাকার জন্য লড়ছি।” এই মামলার রায় প্রযুক্তি দুনিয়ার জন্য এক বড় বার্তা — শুধু নিরাপত্তা নয়, মানুষের গোপনীয়তাও এখন বড় প্রশ্নের মুখে। এই লেখাটি চাইলে আমি সংক্ষিপ্ত ভিডিও স্ক্রিপ্টে রূপ দিতে পারি বা গ্রাফিক্স-সহ সোশ্যাল পোস্ট তৈরি করতে পারি।