প্রয়াত আলহাজ্ব অধ্যাপক ড. এ.বি.এম. মফিজুল ইসলাম পাটোয়ারী
যিনি স্বপ্নকে বাস্তবতায় রূপ দিয়েছেন
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) প্রতিষ্ঠাতা ড. এ.বি.এম. মফিজুল ইসলাম পাটোয়ারী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রকৃত অর্থে একজন একাডেমিক। আইন শাস্ত্রের বিভিন্ন শাখায় তিনি ২০টিরও বেশি বই এবং ৩৫টি প্রবন্ধের রচয়িতা।
ড. পাটোয়ারী দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা করেছেন। গবেষক হিসেবে তিনি লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স-এ মানবাধিকার বিষয়ে কাজ করেন। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড লিগ্যাল স্টাডিজেও গবেষণা করেন। তার মূল গবেষণার ক্ষেত্র ছিল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং মানবাধিকার।
ড. পাটোয়ারী বাংলাদেশ মানবতাবাদী ও নৈতিক সমিতির সভাপতি ছিলেন, যা নেদারল্যান্ডসের উট্রেখ্ট ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবতাবাদী ও নৈতিক ইউনিয়নের সাথে যুক্ত। তিনি এই সমিতির মাধ্যমে প্রকাশিত হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট রিভিউ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
তিনি যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম এবং ভারতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কর্মশালা ও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ‘আদিবাসী জনগণ এবং দাসত্ব’ বিষয়ক কর্মদলের বিভিন্ন অধিবেশনেও উপস্থিত ছিলেন।
তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা ছিলেন। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) পাশাপাশি তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন:
- টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল এডুকেশন ইনস্টিটিউট, ঢাকা
- ড. জেড.আই. চৌধুরী এগ্রিকালচার ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, গাইবান্ধা
- ড. এম.আই. পাটোয়ারী টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল এডুকেশন ইনস্টিটিউট, রংপুর
- অ্যাডভোকেট রোকেয়া বেগম মডেল স্কুল, রংপুর
- মল্লিকজান প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাইবান্ধা
- আব্দুল কাদের মডেল হাই স্কুল, গাইবান্ধা
এই প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় সাতশত মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে। তিনি বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ এবং এতিমখানায় আর্থিক সহযোগিতা করতেন।
ড. পাটোয়ারী ছিলেন এক বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি শুধু একজন একাডেমিক নন, মানবতাবাদী, দানশীল এবং সফল উদ্যোক্তাও ছিলেন। তিনি স্বভাবতই অন্তর্মুখী ছিলেন এবং প্রচারের বাইরে থাকতে পছন্দ করতেন।
অধ্যাপক পাটোয়ারী এমন একজন ব্যক্তিত্ব, যাকে যারা জানেন তাদের কাছে কোনো শব্দ প্রয়োজন হয় না এবং যারা জানেন না তাদের জন্য কোনো শব্দ যথেষ্ট হবে না। তাকে যারা চিনতেন তারা তাকে গভীরভাবে স্মরণ করেন। তিনি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি পরিবারের হৃদয়ে চিরকাল থাকবেন এবং আমাদের অস্তিত্বে সর্বদা তাকে খুঁজে পাই।