
বিশ্বের একমাত্র নেট–পজিটিভ ফিউশন পরীক্ষা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তি উৎপাদন করতে পারছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইগনিশন ফ্যাসিলিটি (NIF) তাদের ফিউশন পরীক্ষায় শক্তির পরিমাণ ৫.২ মেগাজুল থেকে বাড়িয়ে ৮.৬ মেগাজুল পর্যন্ত নিয়ে গেছে। এই অর্জনটি ২০২২ সালের ঐতিহাসিক পরীক্ষার তুলনায় অনেক বড় উন্নতি। ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো একটি নিয়ন্ত্রিত ফিউশন বিক্রিয়া তার ব্যবহৃত শক্তির চেয়ে বেশি শক্তি তৈরি করেছিল। তখন উৎপন্ন শক্তি ছিল ৩.১৫ মেগাজুল, যেখানে লেজার দিয়েছিল ২.০৫ মেগাজুল। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো পরীক্ষায় এমন পর্যায়ে পৌঁছানো যায়নি যে সেগুলো থেকে সরাসরি গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। এমনকি পুরো ল্যাব চালানোর শক্তিও এখনো ফিউশন থেকে পাওয়া যায় না। উদাহরণস্বরূপ, প্রথম সফল পরীক্ষার জন্য লেজার চালাতে লেগেছিল ৩০০ মেগাজুল শক্তি। তবে এসব পরীক্ষা প্রমাণ করছে যে নিয়ন্ত্রিত নিউক্লিয়ার ফিউশন আর শুধু তাত্ত্বিক কিছু নয় — এটি বাস্তবতাও হতে পারে।
NIF যেভাবে ফিউশন কাজ করে:
এই ল্যাবের পদ্ধতিকে বলে ইনারশিয়াল কনফাইনমেন্ট ফিউশন (Inertial Confinement Fusion)। এতে ফিউশন জ্বালানিকে হীরার আবরণ দিয়ে একটি ছোট স্বর্ণের নল (যাকে হোলফ্রাম বলে) এর মধ্যে রাখা হয়। এরপর এই ছোট প্যালেটটিকে একটি বিশাল গোলাকার ভ্যাকুয়াম চেম্বারে রাখা হয়, যেখানে ১৯২টি শক্তিশালী লেজার একসাথে আঘাত করে। লেজারের আঘাতে সেই স্বর্ণের নল গলে যায় এবং এক্স-রে তৈরি করে, যা জ্বালানির প্যালেটটিকে শক্তি দেয়। এতে প্যালেটটি গরম হয়ে প্লাজমায় পরিণত হয় এবং ভেতরের ডিউটেরিয়াম–ট্রিটিয়াম ফিউশন জ্বালানি এতটাই চাপ পায় যে, পরমাণুর নিউক্লিয়াস একত্রিত হয়ে শক্তি তৈরি করে।
আরেকটি ফিউশন পদ্ধতি আছে, যাকে বলে ম্যাগনেটিক কনফাইনমেন্ট। এতে সুপারকন্ডাক্টিং চুম্বক দিয়ে প্লাজমাকে সংকুচিত করে রাখা হয়। যদিও এই পদ্ধতিতে এখনো পর্যন্ত কোনো পরীক্ষায় নেট-পজিটিভ শক্তি পাওয়া যায়নি, তবে কিছু গবেষণা চলছে যেগুলো ভবিষ্যতে সফল হতে পারে। বর্তমানে অনেক স্টার্টআপ কোম্পানি এই লেজারভিত্তিক ফিউশন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে, যেমন Xcimer Energy এবং Focused Energy।