
মানুষের মতো দেখতে রোবটদের এখনও অনেক পথ বাকি, যদি তারা আসল মানুষের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে চায়। সম্প্রতি চীনের বেইজিং শহরের E-Town টেক হাবে অনুষ্ঠিত হলো বিশ্বের প্রথম হিউম্যানয়েড (মানবসদৃশ) হাফ ম্যারাথন। এই দৌড়ে ২১টি রোবট প্রতিযোগিতা করেছে হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে। Bloomberg জানায়, এই রেসে বিজয়ী রোবটের নাম Tiangong Ultra। এটি তৈরি করেছে সরকারি সহায়তায় গঠিত গবেষণা সংস্থা X-Humanoid । এই রোবট রেস শেষ করেছে ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিটে। মানুষের জন্য এই টাইম খুব একটা ভালো নয়—মানুষের মধ্যে প্রথম হওয়া দৌড়বিদ রেস শেষ করেছেন মাত্র ১ ঘণ্টা ২ মিনিটে, এবং অনেক সাধারণ মানুষই ২ ঘণ্টার কম সময়ে হাফ ম্যারাথন শেষ করতে পারে। Tiangong Ultra -র জয়ের পেছনে ছিল মানুষের সাহায্য। একজন মানুষ তার সামনে দৌড়াচ্ছিলেন, যার পিঠে ছিল একটি বিশেষ সংকেত যন্ত্র। রোবটটি সেটির সাহায্যে তার চলাফেরা নকল করছিল। অন্য অনেক রোবট ছিল রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে পরিচালিত—তাদের পাশে পাশে দৌড়াচ্ছিলেন মানুষ অপারেটররা।
👉 ভিডিওটি দেখে নিন – রোবট দৌড়াচ্ছে! https://twitter.com/i/status/1913521470397112555
সব রোবটই তিন ঘণ্টার বেশি সময় নিয়েছে রেস শেষ করতে, আর মাত্র চারটি রোবট চার ঘণ্টার সময়সীমার মধ্যেই দৌড় শেষ করতে পেরেছে। কেউ কেউ তো রেসের শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছে। যেমন, Shennong নামের রোবট এক মানুষের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে একদম গেটের সঙ্গে ধাক্কা মেরে ভেঙে পড়ে। আর Little Giant, সবচেয়ে ছোট রোবট (উচ্চতা মাত্র ৩০ ইঞ্চি), একসময় দাড়িয়ে পড়ে কারণ তার মাথা থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল। এই হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল বিভিন্ন চীনা কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বানানো রোবট। Unitree G1 নামের একটি রোবট তো রেস শুরুর সময়ই পড়ে যায়। কোম্পানির দাবি, তাদের ক্লায়েন্ট রোবটটি ব্যবহার করছিল, কিন্তু তাদের নিজস্ব সফটওয়্যার চালু করা হয়নি। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হলে রোবটের দুই পায়ে হাঁটতে হতে হতো এবং দেখতে মানুষসদৃশ হতে হতো। রোবটরা মানুষের থেকে আলাদা, বিশেষভাবে ঘেরা লেনে দৌড়েছে। নিরাপত্তার জন্য সবাইকে আলাদা সময়ে শুরু করতে দেওয়া হয়েছিল। মাঝেমধ্যে ব্যাটারি বদলানোও অনুমতি ছিল – Tiangong Ultra-এর ব্যাটারি তিনবার বদলানো হয়েছিল। এমনকি রোবট বদল করেও রেস চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল, যদিও তার জন্য সময়ের জরিমানা হতো। X-Humanoid-এর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা তাং জিয়াং বলেন, “আমি অহংকার করতে চাই না, কিন্তু মনে করি পশ্চিমা কোনো কোম্পানি এখনও Tiangong-এর মতো ক্রীড়া দক্ষতা দেখাতে পারেনি।” রোবটরা ধীরে দৌড়ালেও, এটা স্পষ্ট যে তারা এখন ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে এক নতুন ভবিষ্যতের দিকে।