
Manus, যা চীনা স্টার্টআপ বাটারফ্লাই ইফেক্ট এর তৈরি একটি ভাইরাল এআই এজেন্ট প্ল্যাটফর্ম, তা অপ্রত্যাশিতভাবে আরেকটি এআই টুলের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে, যার নাম ব্রাউজার ইউজ।ব্রাউজার ইউজ এমন একটি টুল যা ওয়েবসাইটগুলিকে এজেন্টিক অ্যাপ্লিকেশনের জন্য আরও সহজলভ্য করে তোলে, যেখানে এআই ব্যবহারকারীকে সহায়তা করতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে। গত এক সপ্তাহে এর ব্যবহার অভাবনীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ৩ মার্চ যেখানে এর দৈনিক ডাউনলোড সংখ্যা ছিল প্রায় ৫,০০০, ১০ মার্চ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮,০০০-এ। টুলটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা গ্রেগর জুনিক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকক্রাঞ্চকে।গ্রেগর জুনিক বলেছেন, “গত কয়েকদিন ছিল সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমরা গিটহাবে সবচেয়ে ট্রেন্ডিং রিপোজিটরি হয়েছি, প্রচুর ডাউনলোড হয়েছে, এবং এগুলোর সবকিছুই প্রকৃত ব্যবহারের ক্ষেত্রে বড় সংখ্যায় রূপান্তরিত হচ্ছে।”এই হঠাৎ জনপ্রিয়তার কারণ কী? ম্যানাস কীভাবে ব্রাউজার ইউজ ব্যবহার করছে, তা নিয়ে করা একটি পোস্ট এক্স (পূর্বের টুইটার) প্ল্যাটফর্মে ২.৪ মিলিয়নের বেশি ভিউ এবং শত শতবার শেয়ার হয়েছে। ব্রাউজার ইউজ হলো সেই উপাদানগুলোর মধ্যে একটি যা ম্যানাস বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের জন্য ব্যবহার করে, যেমন ওয়েবসাইটের মেনুতে ক্লিক করা, ফর্ম পূরণ করা ইত্যাদি।ব্রাউজার ইউজ তৈরি করেছেন গ্রেগর জুনিক এবং ম্যাগনাস মুলার, যারা ২০২৩ সালে ETH Zurich-এর স্টুডেন্ট প্রোজেক্ট হাউস থেকে এটি শুরু করেন। তারা বিশ্বাস করতেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ওয়েব এজেন্ট (স্বয়ংক্রিয় ওয়েব ব্রাউজার এআই) হবে সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি।
গ্রেগর বলেন, “কয়েকটি মধ্যাহ্নভোজের আলোচনাই ধীরে ধীরে একটি চ্যালেঞ্জে পরিণত হলো—আমরা একটি ছোট কিছু বানিয়ে হ্যাকার নিউজে ছাড়লাম, এবং দেখি কী হয়! মাত্র চার দিনে একটি প্রাথমিক সংস্করণ (MVP) তৈরি করি, প্রকাশ করি, আর তারপরই এটি গগনচুম্বী সাফল্য পায়।”ব্রাউজার ইউজ ওয়েবসাইট থেকে প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন বোতাম, উইজেট ইত্যাদি আলাদা করতে পারে, যাতে এআই মডেলগুলো সহজেই সেগুলোর সঙ্গে ইন্টারঅ্যাক্ট করতে পারে। এটি একাধিক ব্রাউজার ট্যাব পরিচালনা করতে পারে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফাইল সংরক্ষণ এবং ডাটাবেস পরিচালনার মতো কাজ করতে পারে, এমনকি মাউস ও কীবোর্ড ইনপুটও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।ব্রাউজার ইউজ কোম্পানি এর ব্যবস্থাপিত প্ল্যানের জন্য টাকা নেয়, তবে এটি একটি বিনামূল্যেও ব্যবহার করা যায়। বিনামূল্য সংস্করণটিই সম্প্রতি ম্যানাস-এর কারণে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।গ্রেগর জুনিক বলেন, “আমরা এমন কিছু তৈরি করতে চেয়েছি যা ডেভেলপারদের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে, যাতে তারা সহজেই ব্রাউজার এজেন্ট তৈরি করতে পারে। আমাদের ধারণা অনুযায়ী, এই বছরের শেষের মধ্যেই ওয়েবে মানুষের চেয়ে বেশি সংখ্যক এজেন্ট থাকবে।”এটি হয়তো খুবই উচ্চাশাপূর্ণ কথা, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এআই এজেন্ট প্রযুক্তির বাজার সত্যিই দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান Research and Markets এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৯ সালের মধ্যে এই খাতের বাজারমূল্য ৪২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। Deloitte এর এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে ৫০% কোম্পানি এআই এজেন্ট ব্যবহার করবে।ম্যানাস-এর প্রভাব ছাড়াও ব্রাউজার ইউজ-এর উত্থান নিঃসন্দেহে প্রযুক্তির এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ের সূচনা করেছে।