দেশে চলমান পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্প খাতে স্থিতিশীল শ্রম পরিস্থিতি বজায় রাখতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিলের (আইবিসি) সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। গতকাল বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত আইবিসির নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ সহযোগিতা চাওয়া হয়।
সভায় বিজিএমইএ নেতারা বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি পোশাক শিল্পের জন্য এক নতুন বাস্তবতা নিয়ে এসেছে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো পোশাক শিল্পের আমদানি, রফতানি ও উৎপাদন কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। পোশাক শিল্প খাতকে নগদ প্রবাহ সংকটসহ নানা ধরনের আর্থিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে।এরপরও সাপ্লাই চেইন সচল রাখতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কারখানাগুলো।
চলমান পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্পের সার্বিক কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন ও মসৃণভাবে পরিচালনা করার লক্ষ্যে এ খাতে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চেয়েছেন বিজিএমইএ নেতারা। তারা বলেন, কারখানাগুলোয় যাতে করে শ্রম অসন্তোষের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় এবং তুচ্ছ ঘটনার জেরে শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে সাধারণ মানুষদের জন্য ভোগান্তি বয়ে না আনেন। এ ব্যাপারে আইবিসিকে সহায়তা প্রদানের অনুরোধও জানিয়েছেন তারা।
সভায় কারখানার অভ্যন্তরের সমস্যাগুলো ত্রিপক্ষীয়ভাবে সমাধানের ওপর জোর দেয়া হয়। বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কোথাও কোনো সমস্যা হলে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।’
একই রকম কথা বলেন সেনা কর্মকর্তা কর্নেল মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘দাবি (কারখানার অভ্যন্তরে) আসতেই পারে, কিন্তু দাবিগুলো সমাধান করতে হবে যৌথভাবে।’
সভায় সব পক্ষ সুষ্ঠু শ্রম পরিস্থিতি বজায় রাখার বিষয়ে একমত হয়। একই সঙ্গে মজুরি বা অন্য যেকোনো ইস্যুতে মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে কোনো দূরত্ব বা দ্বন্দ্ব তৈরি হলে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিনিধি
মিলে আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধান করবেন বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন সংগঠনের সহসভাপতি (অর্থ)
মো. নাসির উদ্দিন, পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল, মো. নুরুল ইসলাম, সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী সাগর, মো. রেজাউল আলম (মিরু)।সভায় সেনা কর্মকর্তা কর্নেল মহিউদ্দিন, শিল্পাঞ্চল পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আজাদ মিয়া, ডিআইজি (ডিআইএফআই, গাজীপুর) আহমেদ বেল্লাল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গাজীপুরের এসপি মো. সারওয়ার আলম এবং বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ছিলেন আইবিসির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ বাদল, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস ও লেদার ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদ, ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্সের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স লীগের জেড এম কামরুল আনাম, ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্সের সাধারণ সম্পাদক চায়না রহমান এবং বাংলাদেশ মেটাল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি এএম নাজিম উদ্দিন।
একই দিনে আইবিসি-বহির্ভূত ২৫টি শ্রমিক ফেডারেশনের সঙ্গে অপর এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বিজিএমইএ।