
২০২৪ সালের শুরুতে যখন মনিক পামেচা তার সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্থনি ক্রিভোনোসকে নিয়ে টোমা নামের এআই ভয়েস স্টার্টআপ চালু করেন, তখন তিনি ভাবেননি যে তাকে গ্রীষ্মের দিনগুলো বাইবেল বেল্ট অঞ্চলের গাড়ির শোরুমে ঘেমে কাজ করতে হবে। তারা তখনও ব্যাংক ও স্বাস্থ্যখাতের ক্লায়েন্টদের নিয়ে কাজ করছিলেন। ঠিক সেই সময় গাড়ির ডিলাররা তাদের কাছে যোগাযোগ করে বলল, “আমরা ফোন কলের চাপে ডুবে যাচ্ছি।” তখন তারা বুঝলেন এটা ব্যাংক বা স্বাস্থ্যখাতের মতো কঠিন নিয়ন্ত্রিত ক্ষেত্র না, তাই সুযোগ আছে। তারা পরীক্ষা হিসেবে সিদ্ধান্ত নেন – toma-এর এআই ভয়েস এজেন্ট দিয়ে দেশের প্রতিটি গাড়ির শোরুমে একাধিকবার ফোন করানো হবে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেখা গেল, এসব ফোনের মাত্র ৪৫%-এর উত্তর দেওয়া হয়। তারা তখন নিজেরা মাঠে নামলেন। ওকলাহোমা ও মিসিসিপির ডজনখানেক গাড়ির শোরুম ঘুরে দেখলেন। অনেক সময় নিজের হাতে কাজ করতে হয়েছে – যার প্রমাণ পামেচার জামার তেলের দাগ! এই প্রচেষ্টার ফল মিলল। শুধু ক্লায়েন্টই পেলেন না, ডিলারদের আন্তরিক আতিথেয়তাও পেলেন। কেউ তাদের বাড়িতে খেতে দাওয়াত দিলেন, কেউ করভেট মিউজিয়াম ঘুরে দেখালেন, এমনকি শুটিং রেঞ্জেও নিয়ে গেলেন।
এই দৃঢ় প্রচেষ্টা দেখে আস্থা পেয়েছে নামকরা বিনিয়োগ সংস্থা a16z (Andreessen Horowitz)। তারা এখন পর্যন্ত টোমায় ১ কোটি ৭০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করেছে। a16z-এর পার্টনার সীমা অ্যাম্বেল বললেন, “এই দুইজন উদ্যোক্তা আসলে ডিলারশিপগুলোতেই বাস করছিলেন যেন, পুরো সিস্টেমটা হৃদয় দিয়ে বুঝেছেন।” এই মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে, টোমার এআই ভয়েস এজেন্টকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে এটি এখন ১০০টিরও বেশি গাড়ির শোরুমে ব্যবহার হচ্ছে। এটি গ্রাহকদের সার্ভিস বুকিং করতে, পার্টস অর্ডার নিতে, বিক্রয় সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে সাহায্য করে। টোমা বিনিয়োগ পেয়েছে আরও কিছু জায়গা থেকেও – যেমন Y Combinator (যেখান থেকে তারা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে), Scale Angels, এবং গাড়ি শিল্পের ইনফ্লুয়েন্সার Yossi Levi (Car Dealership Guy)। Yossi বলেন, “গাড়ির শোরুমগুলোতে ফোন কল সামলানো খুব কঠিন। কখনো খুব বেশি কল আসে, কখনো কম – ঠিকঠাক লোকজন রাখা, ট্রেইন করা – এটা সবসময় সম্ভব না। এইখানে এআই অনেক সাহায্য করছে।” টোমার এআই শুরুতে ডিলারদের পুরনো কল শুনে ট্রেনিং নেয়। এরপর আস্তে আস্তে নিজের কাজ শুরু করে, আর যেটা বুঝতে পারে না, সেটা মানুষের কাছে হস্তান্তর করে দেয়। এরপর সেই হস্তান্তর করা কলগুলো বিশ্লেষণ করে আরও ভালোভাবে শেখে। টোমা সাবস্ক্রিপশন মডেলে কাজ করে – মানে যত বেশি কাজ করবে, তত বেশি ফিচার আনলক হবে, এবং দামও বাড়বে। এই নতুন বিনিয়োগ টোমার জন্য বড় সুযোগ। এতদিন প্রতিষ্ঠানটির মূল বিক্রয় কাজ করতেন প্রতিষ্ঠাতা দুইজনই। এখন তারা প্রথম সত্যিকারের সেলস এমপ্লয়ি নিয়োগ দিয়েছেন। পামেচা বলেন, “ডিলারদের সমস্যার গভীরতা বুঝতে পারা আর তাদের পাশে থাকা – এটিই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে উঠেছে। আমি মনে করি, আমরা এখন বন্ধু হয়ে গেছি।”