
ডাটা স্টোরেজ এবং নিরাপত্তা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা কোম্পানি Lonestar এবং সেমিকন্ডাক্টর ও স্টোরেজ নির্মাতা Phison একসঙ্গে একটি ডাটা সেন্টার ইনফ্রাস্ট্রাকচার মহাকাশে পাঠিয়েছে। বুধবার, তারা SpaceX Falcon 9 রকেটের মাধ্যমে এই সিস্টেমটি পাঠিয়েছে, যা ৪ মার্চ চাঁদে অবতরণ করবে। এটি বিশ্বের প্রথম লুনার ডাটা সেন্টার, যা ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হবে এবং এক পেটাবাইট পর্যন্ত তথ্য সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে।Lonestar-এর প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারম্যান এবং CEO ক্রিস স্টট জানান, মহাকাশে ডাটা সেন্টার তৈরি করার ধারণাটি প্রথম আসে ২০১৮ সালে, যখন এখনও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-নির্ভর ডাটা সেন্টারের ব্যাপক চাহিদা শুরু হয়নি। অনেক প্রতিষ্ঠান এমন একটি বিকল্প খুঁজছিল, যেখানে তাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সাইবার হামলা এবং অন্যান্য ঝুঁকি থেকে নিরাপদে রাখা যাবে।স্টট বলেন, “মানবতার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হলো তথ্য। অনেকেই বলে, ডাটা হলো নতুন যুগের তেল। আমি বলব, এটি তার থেকেও অনেক বেশি মূল্যবান।”Lonestar-এর এই মিশনে Phison গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। Phison এর আগে NASA-এর Perseverance Rover মিশনের জন্য স্টোরেজ তৈরি করেছে। Lonestar-এর অনুরোধ পাওয়ার পর, তারা একটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা Pascari SSD তৈরি করেছে, যা মহাকাশের কঠিন পরিবেশেও কাজ করতে সক্ষম। Phison-এর জেনারেল ম্যানেজার এবং প্রেসিডেন্ট মাইকেল উ বলেন, “ক্রিসের কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর, আমরা আমাদের স্ট্যান্ডার্ড পণ্য থেকে একটি বিশেষ সংস্করণ তৈরি করেছি, যা মহাকাশে কাজ করতে পারবে। এটি আমাদের জন্য একটি উত্তেজনাপূর্ণ যাত্রা।”এই মিশনে বিভিন্ন ধরণের গ্রাহকের তথ্য পাঠানো হয়েছে। কিছু সরকার দুর্যোগকালীন তথ্য সংরক্ষণের জন্য এটি ব্যবহার করছে, একটি মহাকাশ সংস্থা বড় ভাষার মডেল (Large Language Model – LLM) পরীক্ষার জন্য তথ্য পাঠিয়েছে, এবং জনপ্রিয় ব্যান্ড Imagine Dragons তাদের একটি মিউজিক ভিডিও পাঠিয়েছে, যা Starfield গেমের সাউন্ডট্র্যাকের অংশ।Lonestar একমাত্র প্রতিষ্ঠান নয়, যারা মহাকাশে ডাটা সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। Lumen Orbit নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান ২০২৪ সালে Y Combinator-এর সামার ব্যাচ থেকে উঠে এসেছে, এবং তারা $২১ মিলিয়ন বিনিয়োগ সংগ্রহ করেছে। বর্তমানে AI এবং ক্লাউড কম্পিউটিং-এর ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে, এবং মহাকাশ-ভিত্তিক ডাটা স্টোরেজ এই চাহিদা মেটাতে একটি নতুন সুযোগ তৈরি করছে, যেখানে প্রচুর স্টোরেজ ক্যাপাসিটি ও সৌরশক্তির সুবিধা রয়েছে—যা পৃথিবীর ডাটা সেন্টারগুলোর পক্ষে সম্ভব নয়।Lonestar-এর পরবর্তী পরিকল্পনা আরও বড়। যদি সবকিছু পরিকল্পনামতো চলে, তাহলে তারা স্যাটেলাইট নির্মাতা Sidus Space-এর সঙ্গে কাজ করে ২০২৭ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ছয়টি ডাটা স্টোরেজ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে।স্টট বলেন, “৬০ বছর আগে অ্যাপোলো মিশনে মাত্র ২ কিলোবাইট RAM ও ৩৬ কিলোবাইট স্টোরেজ ছিল। আর এখন, আমরা Phison Pascari-এর মাধ্যমে ৮ টেরাবাইট স্টোরেজ ও ১ গিগাবাইট RAM নিয়ে চাঁদের পথে যাচ্ছি। এটি সত্যিই অসাধারণ।”